খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক মইনুল ইসলাম বিমানবন্দরে আটক; স্ত্রী সহ কানাডার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তিনি
  ব্যক্তিগত আয়কর দেয়ার সময় বাড়লো ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ১৫ ফেব্রুয়ারি : এনবিআর
প্রথম যাত্রায় খুলনার ৫৫৩ যাত্রী

খুলনা-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ চলাচল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা-ঢাকা রুটে মঙ্গলবার ভোর থেকে চালু হয়েছে নতুন ট্রেন ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’। পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রুটে সময় লাগছে মাত্র পৌনে ৪ ঘণ্টা। দূরত্ব, যাতায়াতের সময় ও ভাড়া কম হওয়ায় রেলওয়ের এই উদ্যোগে খুশী যাত্রীরা।

খুলনা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছায় সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে। এটি আবার রাত ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

প্রথম দিন খুলনা থেকে ৫৫৩ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খুলনা থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় যান। তবে খুলনা প্রান্তে ছিল না কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

প্রথম দিন খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া যাত্রী আরিফুল ইসলাম ও হামিদ শেখ বলেন, নতুন রুটে দূরত্ব কমে যাওয়ায় এখন যাতায়াতে সময় কম লাগবে। এ ছাড়া ভাড়াও কম লাগবে। এতে আমরা খুশী। তবে শীতকালে ট্রেন ছাড়ার সময়সূচি ভোর ৬টার পরিবর্তে ৭টায় করলে ভালো হয়।

নগরীর খালিশপুর গোয়ালখালী এলাকার বাসিন্দা যাত্রী সোহেল হোসেন বলেন, শীতকালে ভোর ৬টায় অন্ধকার থাকে। ট্রেনে যাওয়ার জন্য আমি ভোর সোয়া ৫টায় বাসা থেকে বের হই। এরপর স্টেশনে আসার জন্য সিএনজি পেতে অনেক সময় লেগেছে। সকাল ৬টার পরিবর্তে সিডিউল এক ঘন্টা বাড়ানো বা ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হলে অনেক ভালো হতো।

নতুন এই ট্রেনের বিষয়ে মো. শহীদ হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, এই ট্রেনটি খুলনাবাসীর জন্য আশির্বাদ। ট্রেন যখন চুয়াডাঙ্গা, দর্শনা ঘুরে যেতে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা সময় লাগতো। এখন সাড়ে ৩ ঘন্টা থেকে পৌনে চার ঘন্টায় ঢাকা পৌছানে খুবই ভালো হয়েছে খুলনাবাসীর জন্য। সিডিউল অনুযায়ী সকাল ৬টায় যাত্রায় যাত্রীদের জন্য একটু কষ্টকর। তবে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

মো. ইসরাইল বলেন, ট্রেনটি খুলনার জন্য একটি আশির্বাদ এবং বহু আকাঙ্খিত। তবে ট্রেনের সূচি আরও এগিয়ে দিলে ভালো হতো। এতো স্বল্প সময়ে ট্রেনে করে খুলনা থেকে ঢাকা যাব কখনোই আমরা ভাবিনি। মাত্র ৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় যাওয়া যাচ্ছে ট্রেনে। এখন বাসের সময়ের মধ্যেই ট্রেনে যাওয়া যাচ্ছে। এটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য উপহার দিয়েছেন বর্তমান সরকার।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, বিদেশ থেকে ট্রেনের নতুন ইঞ্জিন ও বগি আনা হচ্ছে। ৬ মাস পর এই রুটে নতুন আরও ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে সোমবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন ট্রেনটি চলাচল করবে। ট্রেনটি যাওয়া-আসার পথে যশোরের নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে।

খুলনা রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আশিক আহমেদ জানান, আজ সকাল ৬টায় জাহানাবাদ ট্রেনটি প্রথমবারের মতো খুলনা রেল স্টেশন ছেড়ে গেল। এটা সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় যেয়ে পৌছানোর কথা রয়েছে। প্রথমদিন খুলনা থেকে ৫৫৩ জন যাত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ট্রেনের সিট রয়েছে ৭৬৮টি। এই ট্রেনে ১১টি যাত্রীবাহী কোচ এবং একটি লাগেজ ভ্যান রয়েছে। ধারণ ক্ষমতার ৬৯ শতাংশ যাত্রী খুলনা থেকেই যাত্রা করেছে। এছাড়া অন্যান্য স্টেশন থেকে যাত্রীরা উঠবে। নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, নড়াইল, কাশিয়ানী, পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকায় যাবে।

তিনি আরও বলেন, ট্রেনটিতে মোট ১২টি বগি রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি যাত্রীবাহী ও ১টি পণ্যবাহী। ১১টি বগিতে আসন সংখ্যা ৭৬৮টি। এই রুটের দূরত্ব ৩৭৮ কিলোমিটার। খুলনা-ঢাকা রুটে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ভ্যাট ছাড়া ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া ৭৪০ টাকা, এসি সিট শ্রেণির ভাড়া ৮৮৫ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১ হাজার ৩৩০ টাকা।

এদিকে প্রথমবারের মতো নড়াইল স্টেশনে পৌছেছে যাত্রীবাহী ট্রেন জাহানাবাদ। সকাল ৭ টা ৩৭ মিনিটে নড়াইলে পৌছালে সেখানে হাত নেড়ে ট্রেনের যাত্রীদের স্বাগত জানান স্থানীয়রা। ট্রেনটি সকাল ৭ টা ৪৩ মিনিটে নড়াইল স্টেশন ত্যাগ করে। আর সকাল ৮ টা ৩ মিনিটে লোহাগড়া গিয়ে পৌছায় ট্রেন জাহানাবাদ এক্সপ্রেস।

খুলনা গেজেট/হিমালয়/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!